দ্রুত বিয়ের ফল মিষ্ট কিন্তু ধৈর্যের ফল সুমিষ্ট


আশিকুর রহমান প্রকাশের সময় : আগস্ট ১৫, ২০২৩, ৭:০৯ অপরাহ্ণ /
দ্রুত বিয়ের ফল মিষ্ট কিন্তু ধৈর্যের ফল সুমিষ্ট

আশিকুর রহমান: তুমি, তোমরা, তোমাদের সমাজ যে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বিয়ের কথা বলো, এটা আমি মানতে পারিনা। আমার যখন প্রয়োজন হবে আমি বিয়ে করব, যখন ইচ্ছে বিয়ে করব। তবে এতে অবশ্যই ব্যক্তিগত কিছু আয় থাকলে ভালো আর নাহলে পারিবারিক সহায়তা। তাছাড়া ধৈর্য ধরাই উত্তম তবে খুব বেশি দেরী করা উচিত নয়। আমরা তরুণ বা যুবকরা এই বয়সটাতে নিজের প্রয়োজনীয় আল-কুরআনের আয়াত ও হাদীসগুলোই মনে রাখি কিন্তু যে আয়াত কিংবা হাদীস আমাদের চাওয়া পাওয়ার একটু বিপরীত সেটা মানতে চাইনা বা মনেও রাখিনা। ব্যক্তির প্রয়োজনীয় আয়াত কিংবা হাদীস জাহির করি সবার সর্বসম্মুখে।
প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের তাড়াতাড়িই বিয়ের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা’য়ালা সুরা আন- নূরের ৩২ নং আয়াতে বলেছেন:
“তোমাদের মধ্যে যাদের স্বামী-স্ত্রী নেই, তাদের বিবাহ দাও এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ, তাদেরও। তারা অভাবগ্রস্ত হলে, আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ”।

বিয়ের মাধ্যমে সফলতার কথাও আল্লাহ তা’য়ালা ঘোষণা দিয়েছেন, আল্লাহর ঘোষণা চিরন্তন সত্য ও সুন্দর। তবে হতে হবে সৎ ও চরিত্রবান। সৎ ও চরিত্রবান হোন, তাড়াতাড়ি বিয়ে করুন সফলতার দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ তা’য়ালার অনুগ্রহ। বিপরীতপক্ষে তিনি সুরা আন- নূরের ৩৩নং আয়াতে বলেছেন:
“আর যাদের বিবাহের সামর্থ্য নেই, আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে”।

এছাড়াও, হাদীসে বিবাহের ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান ও ধৈর্যের কথা বলা হয়েছে:
“আলকামাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযি.) এর সাথে মিনায় হাঁটছিলাম। এ সময় উসমান (রাযি.) এর সাথে দেখা হলে তিনি আব্দুল্লাহ (রাযি.) এর সাথে নির্জনে আলাপ করেন। অতঃপর আব্দুল্লাহ যখন দেখলেন, এ বিষয়ে তার কোনো প্রয়োজন নেই, তখন তিনি আমাকে বললেন, হে আলকামাহ! এদিকে এসো। আমি এলে উসমান (রাযি.) তাকে বললেন, হে আবূ আব্দুর রহমান! আমরা কি আপনার সাথে একটি কুমারী মেয়ে বিয়ে দিবো, যাতে আপনি অতীতের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পান? আব্দুল্লাহ (রাযি.) বলেন, আমি এরূপ এজন্যই বলেছি যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ বিয়ের সামর্থ্য রাখলে সে যেন অবশ্যই বিয়ে করে। কেননা বিয়ে দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং যৌন জীবনকে সংযমী করে। আর যে ব্যক্তির বিয়ে করার সামর্থ্য নাই সে যেন অবশ্যই সওম পালন করে। কেননা সওম তার যৌনস্পৃহা দমনকারী। (সহীহ বুখারী, মুসলিম)
এখানে বিয়ের সামর্থ্যের ব্যাপারে জানতে হবে বিয়ের করার পূর্বে কিছু শর্ত যা বিয়ের জন্য উপযুক্ততা প্রমাণ করে। অর্থাৎ আমরা যুবকরা সুরা নূরের ৩২নং আয়াতকে নিজের প্রয়োজনে জাহির করতে ব্যস্ত কিন্তু ৩৩ নং আয়াত মানতে নারাজ কিংবা এই আয়াত সম্পর্কে জানিইনা। সঠিক সময়ে সঠিক পন্থায় দ্রুত বিয়ে করার যেমন ফজিলত রয়েছে তেমনি বিয়ের ব্যাপারে উপযুক্ত না হওয়ার ফলে ধৈর্যের ব্যাপারেও বলা হয়েছে। দ্রুত বিয়ের ফল যেমন মিষ্ট ঠিক সেরকমই এই ধৈর্যের ফল সুমিষ্ট নিশ্চয়ই, কেননা আল্লাহ তা’য়ালার ঘোষণা সবসময়ই সত্য ও এর ফল সুমিষ্ট। তরুণ/ যুবকরা আয়াতের একাংশ বলে অন্যকে বিভ্রান্ত না করে সঠিক তথ্য মানুন ও অন্যকে জানান। এতে রয়েছে কল্যাণ ও পুরষ্কার, যেমন এর বিপরীতে রয়েছে শাস্তি ও তিরষ্কার।
যুবকরা নিজেকে উপযুক্ত করে তুলুন, দ্রুত বিয়ে করুন, সফল হোন। সর্বোপরি, উত্তম জীবনাঙ্গিনী নিয়ে আত্মতৃপ্তিতে থাকুন, জীবন উপভোগ করুন।

মান: অপ্রকাশিত।

লেখা ১০ আগস্ট, ২০২৩ (বৃহস্পতিবার)