কৃষ্ণচূড়ার বিদায় পথে কদমের আগমন। এমন চূড়ান্ত লগ্নে আমাদের লেখক ফোরামেও আমাদের কৃষ্ণচূড়ার মতো সিনিয়দের বিদায় এবং কদমের মতো নতুনদের বরণ করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এবং সেই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই আমরা, ‘বাংলাদেশ তরণ কলাম লেখক ফোরাম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা’ আয়োজন করে একটি লেখক সম্মেলন। যেখানে তরুণ লেখকদের মেলা বসেছিল সেদিন। দিনটি ছিলো ২০২৩ সালের জুলাইয়ের ৩০ তারিখ। ২০২২-২৩ কার্যবর্ষের শেষদিন। মানে এই লেখক সম্মেলেনের আয়োজকদের কার্যবর্ষের শেষদিন।
আয়োজকরা তাদের কষ্ট মিশ্রিত বুক নিয়ে হাসি মিশ্রিত মুখে আমাদের উপহার দিয়েছে সুন্দর একটি দিন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল ৯টায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে, ইতি আপু এবং তুহিন ভাইয়ার সঞ্চালনায়। তালহা ভাইয়ার স্বাগত বক্তব্য দিয়ে শুরু হয়ে যায় আমাদের কাঙ্ক্ষিত অনুষ্ঠানটি। আমাদের অনুষ্ঠানে একে একে দিকনির্দেশনা দেন আমাদের বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা জাহানুর ইসলাম ভাই, ২০২২-২০২৩ কার্যবর্ষের কেন্দ্রীয় সভাপতি নেজাম ভাই, বশেমুরবিপ্রবির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক ভিসি স্যার। তাদের এসব দিকনির্দেশনার কথাগুলো শুধুমাত্র কথাই ছিল না, সেগুলো ছিলো বাস্তবধর্মী কথা, যে কথাগুলো আমরা আমাদের জীবনের জন্য ব্যবহার করতে পারব।
চাইলেই সেইদিক নির্দেশনা মেনে সমাজের উন্নয়ন ঘটাতে পারবো। আর আমাদের এতো এতো অতিথিদের মাঝে ছিলেন একজন বিশেষ অতিথি, তিনি হলেন সকলের প্রিয় তবীব মাহমুদ ভাইয়া। যিনি আমাদের অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন। তিনি আসলেন, আমাদের মাঝে বক্তব্য রাখলেন, গান গাইলেন চলে গেলেন। শুধুই কি চলে গেলেন?নাহ তিনি দিয়ে গেলেন আমাদের স্মৃতিময় একটি দিন। তার জ্ঞানভান্ডার থেকে দিয়ে গেলেন কিছু জ্ঞান। তার হাতেই বিদায় নিলেন আমাদের কৃষ্ণচূড়ার ন্যায় সিনিয়র রা। আমাদের সকল সিনিয়রদের সম্মাননা স্মারক দেওয়া হলো, মাসিক সেরা লেখকদেরও দেওয়া হলো সম্মাননা স্মারক। এই এতো এতো সম্মাননা স্মারকের মাঝে একটি ক্যাটগরিতে আমিও পেয়েছিলাম একটি স্মারক। যেটি ছিলো আমার লেখক ফোরামে পাওয়া সব থেকে বড় উপহার। যেটি আমার লেখক ফোরামের প্রতি বাড়িয়ে দিয়েছে ভালোবাসা, আবেগ। লাঞ্চের আগেই শেষ করা হয় বক্তব্যের পর্ব, ক্রেস্ট প্রদানের পর্ব, আমাদের সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ ভাইয়ার বক্তব্য দিয়ে।
দুপুর ২টা নাগাদ দেওয়া হলো দুপুরের খাবার। খাবার শেষে শুরু হলো আরেকটি পর্ব। সেটি হলো সাংস্কৃতিক পর্ব। সাংস্কৃতিক পর্বে আমাদের তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মেধাবী সদস্যরা একে একে বিভিন্ন পার্ফামেন্স করতে থাকে। কেউ গান, কেউ নাচ কেউ বা কবিতা আবৃত্তি। সদস্যদের নাচ, গান, আবৃত্তি শেষে মঞ্চে আসে আমাদের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিক এসোসিয়েশন IUMA, তারা এসে মঞ্চ মাতিয়ে দিয়ে যায়। এই সাংস্কৃতিক পর্বের মাঝেই আবার আমাদের নবীন সদস্যদের বরণ করে নেওয়া হয়, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার লোগোযুক্ত ব্যাজ এবং প্রিন্ট করা কলম দিয়ে।
অনুষ্ঠানের একদম শেষে আবার আমাদের চমক দিতে মঞ্চে গান করতে আসেন আমাদের তালহা ভাইয়া এবং আশিক ভাইয়া। তারা সবে মাত্র গানে মেতে উঠেছেন, দর্শক-শ্রোতাদের মনে জোয়ার সৃষ্টি করেছেন ঠিক তখনই চলে গেলো বিদ্যুৎ। ঘুটঘুটে অন্ধকার পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গেলো, অন্ধকারও জানান দিলো আমরা আমাদের প্রবীনদের একটু পর থেকে আর কাছে পাব না। তারা চলে যাবে এই লেখক ফোরাম থেকে, চলে যাবে এই ইবির ক্যাম্পাস থেকে, হয়তোবা ভাগ্যের জোরে দেখা হয়ে যাবে কোনো এক সভায়। অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেলো ৪ টা নাগাদ। বিদায় নিলো আমাদের পথপ্রদর্শক, আমাদের ভরসা, আমাদের প্রবীন সদস্যরা, নবীনরা আসলো লেখক ফোরামের হাল ধরতে। ন বীন, প্রবীণ, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ লেখক এবং বিশেষ অতিথিকে নিয়ে হয়ে গেলো আমাদের তরুণ লেখক সম্মেলন। অনুষ্ঠান একে একে বিদায় নিলো বাহিরে থেকে আসা সকল অতিথি। তারা দিয়ে গেলেন আমাদের বেদনাময়ী সুখের একটি দিন। দিন যাবে, মাস যাবে বছর যাবে, ইবির লেখক ফোরামের অর্জন আরো বাড়বে, বদলে যাবে অনেক কিছুই কিন্তু স্মৃতিতে অমলিন হয়ে থেকে যাবে এই দিনটি।
প্রকাশকাল: ১০আগস্ট,২০২৩
দৈনিক বাংলা
আপনার মতামত লিখুন :