আদর্শ নাগরিকের প্রয়োজন, প্রযুক্তির দক্ষতা অর্জন


আখতার হোসেন আজাদ প্রকাশের সময় : আগস্ট ১৬, ২০২৩, ৯:৫১ অপরাহ্ণ /
আদর্শ নাগরিকের প্রয়োজন, প্রযুক্তির দক্ষতা অর্জন

আখতার হোসেন আজাদ:

বর্তমান সময়কে বলা হয় তথ্য প্রযুক্তির যুগ। সেই সাথে বলা হয়, যদি পৃথিবীতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয় তবে তা হবে সাইবার যুদ্ধ। অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী চলছে ইন্টারনেটে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই।

বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সমৃদ্ধ করতে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্প বাস্তবায়নের মহাযজ্ঞ চালাচ্ছে। আইসিটি খাতে সফলতার হার সন্তোষজনক হলেও এটি আরো বিস্তৃত করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের অধিকাংশ নাগরিক এখন তরুণ। এই তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনার বীজকে পূর্ণতা দান করায় এখন মূল চ্যালেঞ্জ। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ইন্টারনেটের প্রাথমিক বিষয়াদি সম্পর্কে নূন্যতম মানের ধারণা থাকা এখন সময়ের দাবি। মেইল আদান-প্রদান করতে পারা, সার্চ ইঞ্চিনের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য খুঁজে বের করা, স্বাস্থ্য বা কৃষি ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের সহযোগিতা নিয়ে অন্যকে সহযোগিতা করতে পারার দক্ষতা প্রত্যেকের থাকা চাই।

বর্তমানে প্রায় প্রত্যেকের হাতেই শোভা পাচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড ফোন। কিন্তু ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করা, গেমস খেলার মাধ্যমেই যেন এর সীমাবদ্ধতা থেকে যাচ্ছে। বিভিন্ন চাকুরির আবেদন নিমিষেই অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের মাধ্যমেই করা সম্ভব এটি সম্পর্কেও অবগত নয় অনেকেই।
প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভাগে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ছাড়া অন্যদের মধ্যে ইন্টারনেট সম্পর্কে জানার আগ্রহ নিতান্তই কম। দেশে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯ কোটি ৯৫ লাখ ৬৫ হাজার, অর্থ্যাৎ প্রায় ১০ কোটি। এর বেশির ভাগই তরুণ সমাজের সদস্য।

দেশের তরুণ সমাজের কাছে একটি ধারণার প্রচলন হয়েছে ইন্টারনেট ব্যবহার মানেই যেন ইউটিউবে নাটক-সিনেমা দেখা, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া ও ম্যাসেঞ্জারে চ্যাট করা, আর ভিডিও গেমস খেলা। ইন্টারনেট জগতের বিশাল সমুদ্র সম্পর্কে আমার অজানা, এটিও যেন আমাদের যুবসমাজের জানা নেই । অথচ বিভিন্ন বিষয়ে ইউটিউবে শত শত টিউটোরিয়াল রয়েছে। এসব দেখে নিজেকে পারদর্শী করে গড়ে তোলা সম্ভব।
কম্পিউটার ব্যবহারের নূন্যতম পারদর্শীতা প্রত্যেক চাকুরীপ্রার্থীর জন্য অপরিহার্য। এজন্য বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান (যেমন: যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সমাজ সেবা অধিদপ্তর, টিটিসি প্রভৃতি) কিংবা স্বীকৃত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার বিষয়ক বিভিন্ন মৌলিক কোর্সসমূহ শেষ করা প্রয়োজন।

চাকুরির বাজারে প্রথমেই জানতে চাওয়া হয় প্রার্থীর কম্পিউটার ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত জ্ঞান ও দক্ষতা। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, যেসব শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপ রয়েছে অধিকাংশই নাটক, সিনেমা দেখে সময় শেষ করে থাকে। জীবনে চিত্ত-বিনোদনের জন্য এসবের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়।
কম্পিউটার ও ইন্টারনেটে দক্ষতা অর্জন করে আউটসোর্সিয়ের বিভিন্ন কাজ করে সাবলম্বী হবার সুযোগও বিস্তৃত হয়েছে। আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে আইসিটি বিষয় বাধ্যতামূলক থাকলেও উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থায় এটির বালায় নেই। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সকল বিভাগে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট বিষয়ে কোর্স চালু করা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য তথ্য-প্রযুক্তিতে অগাধ পান্ডিত্য অর্জন করতে হবে।

মনে রাখতে হবে, প্রযুক্তি জ্ঞানে দক্ষতা যার, আগামীর বিশ্ব হবে তার।

প্রকাশকাল: ১৩ মে, ২০২০

প্রকাশিত: সকালের সময়

Untitled 1 1

 

তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের আরো খবর

আরও খবর